খুলনায় সন্ত্রাসীদের আড্ডা খানায় পুলিশ, নৌবাহিনীর সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) মধ্যরাতে নগরীর আরামবাগ এলাকার একটি বাড়ি ঘেরাও করে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় সন্ত্রাসীরা যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। যৌথ বাহিনীও গুলি করে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১১ জনকে আটক করেছে। এসময় ৫/৬টি পিস্তল ও বিপুল সংখ্যক গুলি জব্দ করা হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আজম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে সংবাদ পেয়েছি সন্ত্রাসীরা মিটিং করছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা তাদের ঘেরাও করি। একইসঙ্গে যৌথ বাহিনীকে সংবাদ দেওয়া হয়। যৌথ বাহিনী এসে ঘেরাও করে। সন্ত্রাসীরা গোপন মিটিং করছিল। প্রথমে ছাদে ফিস ফিস শব্দ শোনা যাচ্ছিল। অনেকে ছিল। অন্ধকারে সেইভাবে দেখা ও বোঝা যাচ্ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করে। সন্ত্রাসীরা কিছুক্ষণ পর পর গুলি করছিল। আমরাও গুলি করেছি। রাত ১২ টার পর থেকে প্রায় আড়াই-তিন ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে আমাদের পুলিশ সদস্য ২/৩ জন আহত হয়েছে, তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। তাদেরও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, অন্ধকার থাকায় আমরা ওই স্থান ব্লক করে রেখেছি, সকালে আবারও সেখানে যাব। সন্ত্রাসীরা গুলি করছিল আর অস্ত্র ও গুলি ফেলছিল। অনেক অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এখনই সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে ৫/৬ টি অস্ত্র ছিল, গুলি অসংখ্য। সকালে গুনে বলা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এস আই মো: হাই বলেন, রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি যে একদল সন্ত্রাসী সোনাডাঙ্গা থানাধীন বানরগাতী এলাকার আরামবাগ সংলগ্ন একটি সংস্কার যোগ্য বাড়িতে বসে মিটিং করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সেখানে পৌনে ১ টার দিকে উপস্থিত হই। উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর গুলি নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ তাদেরকে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতি বেশ হওয়ায় তারা পিছু হটে। পরবর্তীতে আহত অবস্থায় খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশ ও তার অন্যতম সহযোগী কালা লাভলু ওরফে রুবেল ইসলামসহ ১১ জনকে আটক করতে সক্ষম হই। তাদের সকলকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৩ টি পিস্তল, ১ টি একনলা শর্টগান, ১টি কাটা বন্দুক, ১ টি চাইনিজ কুড়াল, ১ টি চাপাতি, কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি এবং ৭ টি দামি মোটরসাইকেল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়। সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির পেছনে এবং বাড়ির পাশের পুকুরে অনেকগুলো অস্ত্র ফেলে দেয়। যেগুলো উদ্ধারে সকালে ওই পুকুরে তল্লাশি চালানো হবে। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে অভিযান অসমাপ্ত করা হয় এবং বাড়িটি ডিবি পুলিশের একটি দল ঘিরে রেখেছে। এ ঘটনায় ৩ জন পুলিশ সদস্য এবং ১ জন নৌ বাহিনীর সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যরা খুলনা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে আরও জানান।
খুলনা গেজেট/এমএম